< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 1 >

1 আর দায়ূদের ছেলে শলোমন নিজের রাজ্যে নিজেকে শক্তিশালী করলেন এবং তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে থেকে তাঁকে খুব মহান করলেন৷
দাউদের ছেলে শলোমন তাঁর রাজ্যের উপর নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন, কারণ তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সাথেই ছিলেন ও তিনি তাঁকে খুব উন্নত করলেন।
2 পরে শলোমন সমস্ত ইস্রায়েলের অর্থাৎ সহস্রপতিদের, শতপতিদের, বিচারকর্তাদের ও সমস্ত ইস্রায়েলের যাবতীয় শাসনকর্ত্তাদের বংশ প্রধানদের সঙ্গে কথা বললেন৷
পরে শলোমন সমস্ত ইস্রায়েলের সাথে—সহস্র-সেনাপতিদের ও শত-সেনাপতিদের, বিচারকদের এবং ইস্রায়েলের সব নেতার, অর্থাৎ বিভিন্ন বংশের কর্তাব্যক্তিদের—সাথে কথা বললেন
3 তাতে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত সমাজ গিবিয়োনের উঁচু জায়গায় গেলেন; কারণ সদাপ্রভুর দাস মোশি মরুপ্রান্তে যা তৈরী করেছিলেন, ঈশ্বরের সেই সমাগম তাঁবু সেখানে ছিল৷
এবং শলোমন ও সমগ্র জনসমাজ গিবিয়োনের উঁচু স্থানটিতে গেলেন, কারণ ঈশ্বরের সেই সমাগম তাঁবুটি সেখানেই ছিল, যেটি সদাপ্রভুর দাস মোশি মরুপ্রান্তরে তৈরি করলেন।
4 কিন্তু ঈশ্বরের সিন্দুক দায়ূদ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম থেকে, দায়ূদ তার জন্য যে জায়গা তৈরী করেছিলেন, সেখানে এনেছিলেন, কারণ তিনি তার জন্য যিরূশালেমে একটি তাঁবু স্থাপন করেছিলেন৷
ইত্যবসরে দাউদ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম থেকে ঈশ্বরের তাঁবুটি সেখানেই নিয়ে এলেন, যে স্থানটি তিনি সেটি রাখার জন্য তৈরি করলেন, কারণ জেরুশালেমেই তিনি সেটি রাখার জন্য একটি তাঁবু খাটিয়েছিলেন।
5 আর হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেল যে পিতলের যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন, তা সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবু সামনে ছিল; আর শলোমন ও সমাজ তার কাছে গেলেন৷
কিন্তু হূরের নাতি তথা ঊরির ছেলে বৎসলেলের তৈরি করা ব্রোঞ্জের সেই বেদিটি গিবিয়োনে সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবুর সামনেই রাখা ছিল; তাই শলোমন ও সেই জনসমাজ সেখানেই তাঁর কাছে খোঁজখবর নিয়েছিলেন।
6 তখন শলোমন সেখানে সমাগম তাঁবুর কাছে পিতলের বেদিতে সদাপ্রভুর সামনে যজ্ঞ করলেন, এক হাজার হোমবলি উত্সর্গ করলেন৷
শলোমন সমাগম তাঁবুতে সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদির কাছে গেলেন ও সেটির উপর এক হাজার হোমবলি উৎসর্গ করলেন।
7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “চাও, আমি তোমাকে কি দেব?”
সেরাতে ঈশ্বর শলোমনের কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “তোমার যা ইচ্ছা হয়, আমার কাছে তাই চেয়ে নাও।”
8 তখন শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “তুমি আমার পিতা দায়ূদের প্রতি অনেক দয়া দেখিয়েছ, আর তাঁর পদে আমাকে রাজা করেছ৷
শলোমন ঈশ্বরকে উত্তর দিলেন, “আমার বাবা দাউদের প্রতি তুমি যথেষ্ট দয়া দেখিয়েছ এবং তাঁর স্থানে তুমি আমাকেই রাজা করেছ।
9 এখন, হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি আমার পিতা দায়ূদের কাছে যে কথা বলেছ, তাই স্থায়ী হোক; কারণ তুমিই পৃথিবীর ধূলোর মত বহুসংখ্যক এক জাতির উপরে আমাকে রাজা করেছ৷
এখন, হে ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমার বাবা দাউদের কাছে করা তোমার প্রতিজ্ঞাটি সুনিশ্চিত করো, কারণ তুমি আমাকে এমন এক জাতির উপরে রাজা করেছ, যারা সংখ্যায় পৃথিবীর ধূলিকণার মতো অসংখ্য।
10 ১০ আমি যেন এই লোকেদের সামনেই বাইরে যেতে ও ভেতরে আসতে পারি, সেই জন্য এখন আমাকে বুদ্ধি ও জ্ঞান দাও; কারণ তোমার এমন বিশাল প্রজাদের বিচার করার ক্ষমতা কার আছে?”
আমাকে তুমি এমন প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দাও, যেন আমি এইসব লোককে পরিচালনা করতে পারি, কারণ কে-ই বা তোমার এই বিশাল প্রজাপালকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম?”
11 ১১ তখন ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “এটাই তোমার মনে হয়েছে; তুমি ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি, গৌরব কিংবা শত্রুদের প্রাণ চাও নি, লম্বা আয়ুও চাও নি; কিন্তু আমি আমার যে প্রজাদের উপরে তোমাকে রাজা করেছি, তুমি তাদের বিচার করার জন্য নিজের জন্য বুদ্ধি ও জ্ঞান চেয়েছ৷
ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “যেহেতু এই তোমার অন্তরের বাসনা ও তুমি ধনসম্পদ, অধিকার বা সম্মান চাওনি, না তুমি তোমার শত্রুদের মৃত্যু কামনা করেছ, এবং যেহেতু তুমি দীর্ঘায়ু না চেয়ে যাদের উপর আমি তোমাকে রাজা করেছি, আমার সেই প্রজাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রজ্ঞা ও জ্ঞান চেয়েছ,
12 ১২ বুদ্ধি ও জ্ঞান তোমাকে দেওয়া হল; এমনকি তোমার আগে কোনো রাজার ছিল না এবং তোমার পরেও কোনো রাজার হবে না, তত ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি ও গৌরব আমি তোমাকে দেব৷”
তাই তোমাকে প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দেওয়া হবে। এছাড়াও আমি তোমাকে এমন ধনসম্পদ, অধিকার ও সম্মান দেব, যেমনটি না তোমার আগে রাজত্ব করে যাওয়া কোনও রাজা পেয়েছে বা তোমার পরে আসতে চলেছে, এমন কোনও রাজা কখনও পাবে।”
13 ১৩ পরে শলোমন গিবিয়োনের উঁচু জায়গা থেকে, সমাগম তাঁবুর সামনে থেকে, যিরূশালেমে এলেন, আর ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে থাকলেন৷
পরে শলোমন গিবিয়োনের সেই উঁচু স্থানটি ছেড়ে, সমাগম তাঁবুর সামনে থেকে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। আর তিনি ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করে যেতে লাগলেন।
14 ১৪ আর শলোমন অনেক রথ ও ঘোড়াচালক সংগ্রহ করলেন; তাঁর এক হাজার চারশো রথ ও বারো হাজার ঘোড়াচালক ছিল; আর সেই সব তিনি রথ নগরে এবং যিরূশালেমে রাজার কাছে রাখতেন৷
শলোমন প্রচুর রথ ও ঘোড়া একত্রিত করলেন; তাঁর কাছে এক হাজার চারশো রথ ও 12,000 ঘোড়া ছিল, যা তিনি বিভিন্ন রথ-নগরীতে রেখেছিলেন এবং কয়েকটিকে তিনি নিজের কাছে জেরুশালেমেও রেখেছিলেন।
15 ১৫ রাজা যিরূশালেমে রূপা ও সোনাকে পাথরের মত এবং এরস কাঠকে উপত্যকার ডুমুর গাছের মত প্রচুর করলেন৷
জেরুশালেমে রাজা, রুপো ও সোনাকে পাথরের মতো সাধারণ স্তরে নামিয়ে এনেছিলেন, এবং দেবদারু কাঠকে পর্বতমালার পাদদেশে উৎপন্ন ডুমুর গাছের মতো পর্যাপ্ত করে তুলেছিলেন।
16 ১৬ আর শলোমনের ঘোড়াগুলি মিশর থেকে আনা হত, রাজার বণিকেরা দল হিসাবে দাম দিয়ে পালে পালে ঘোড়া পেত৷
শলোমনের ঘোড়াগুলি আমদানি করা হত মিশর ও কুই থেকে—রাজকীয় বণিকেরা বাজার দরে সেগুলি কুই থেকে কিনে আনত।
17 ১৭ আর মিশর থেকে কেনা ও আনা এক একটি রথের দাম ছশো শেকল রূপা ও এক একটি ঘোড়ার দাম একশো পঞ্চাশ শেকল ছিল৷ এই ভাবে তাদের মাধ্যমে সমস্ত হিত্তীয় রাজার ও অরামীয় রাজার জন্যও ঘোড়া আনা হত৷
তারা মিশর থেকে এক-একটি রথ আমদানি করত ছয়শো শেকল রুপো দিয়ে, এবং এক-একটি ঘোড়া আমদানি করত একশো 50 শেকলে। এছাড়াও হিত্তীয় ও অরামীয় সব রাজার কাছে তারা সেগুলি রপ্তানিও করত।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 1 >