< প্রথম রাজাবলি 1 >

1 দায়ূদ রাজা বৃদ্ধ ও তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। লোকেরা তাঁর শরীরে অনেক কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলেও তা আর গরম হত না।
রাজা দাউদ যখন খুব বৃদ্ধ হয়ে গেলেন, তখন এমনকি তাঁর শরীর প্রচুর কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলেও গরম থাকত না।
2 সেইজন্য তাঁর কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “আমাদের প্রভু মহারাজের জন্য আমরা একজন যুবতী কুমারী মেয়ের খোঁজ করি। সে রাজার কাছে থেকে তাঁর সেবা যত্ন করুক। আমাদের প্রভু মহারাজের শরীর যাতে গরম হয়, সেইজন্য সে তাঁর বুকের ওপরে শুয়ে থাকুক।”
তাই তাঁর পরিচারকেরা তাঁকে বলল, “মহারাজের সেবা করার ও তাঁর যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা একজন অল্পবয়স্ক কুমারী মেয়েকে খুঁজে আনি। সে আপনার পাশে শুয়ে থাকবে, যেন আমাদের প্রভু মহারাজের শরীর গরম থাকে।”
3 তাতে তারা গোটা ইস্রায়েল দেশে একটা সুন্দরী মেয়ের খোঁজ করতে লাগল। পরে তারা শূনেমীয়া অবীশগকে পেল এবং তাকে রাজার কাছে নিয়ে গেল।
পরে তারা ইস্রায়েলের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত সুন্দরী এক যুবতীর খোঁজ করল এবং শূনেমীয়া অবীশগকে পেয়ে তাকে রাজার কাছে নিয়ে এসেছিল।
4 সেই মেয়েটি খুব সুন্দরী ছিল। সে রাজার কাছে থেকে তাঁর সেবা যত্ন করতে লাগল, কিন্তু রাজা তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হলেন না।
মেয়েটি অপরূপ সুন্দরী ছিল; সে মহারাজের দায়িত্ব নিয়েছিল ও খুব যত্নআত্তি করল, কিন্তু রাজা তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেননি।
5 দায়ূদের স্ত্রী হগীতের ছেলে আদোনিয় গর্ব করে বলতে লাগল, “আমিই রাজা হব।” এই বলে সে কতগুলো রথ ও ঘোড়সওয়ার ও তার আগে আগে যাবার জন্য পঞ্চাশজন লোকও নিযুক্ত করল।
এদিকে হগীতের ছেলে আদোনিয় আগ বাড়িয়ে বলে বেড়াচ্ছিল, “আমিই রাজা হব।” তাই সে রথ ও ঘোড়া সাজিয়েছিল, ও তার আগে আগে দৌড়ানোর জন্য 50 জন লোক জোগাড় করল।
6 তার বাবা কোনো কাজে তাকে কখনও বাধা দেন নি, বলেন নি, “কেন তুমি এই কাজ করেছ?” আদোনিয় দেখতে সুন্দর ছিল; তার জন্ম হয়েছিল অবশালোমের পরে।
(তার বাবা কখনও এই বলে তাকে তিরস্কার করেননি, “তুমি কেন এরকম আচরণ করছ?” সেও দেখতে খুব সুন্দর ছিল ও অবশালোমের পরেই তার জন্ম হল।)
7 সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে আদোনিয় পরামর্শ করল, আর তারাও তার পক্ষ হয়ে তাকে সাহায্য করল।
আদোনিয় সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে আলোচনা করল, এবং তারা তাকে তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন।
8 কিন্তু যাজক সাদোক যিহোয়াদার ছেলে বনায়, ভাববাদী নাথন, শিমিয়ি, রেয়ি এবং দায়ূদের বীর যোদ্ধারা আদোনিয়ের পক্ষে যোগ দিল না।
কিন্তু যাজক সাদোক, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, ভাববাদী নাথন, শিমিয়ি ও রেয়ি এবং দাউদের বিশেষ রক্ষীদল আদোনিয়ের সঙ্গে যোগ দেননি।
9 ঐন্‌ রোগেলের পাশে সোহেলৎ পাথরের কাছে আদোনিয় কতগুলো ভেড়া, ষাঁড় এবং মোটাসোটা বাছুর বলিদান করে তার সব ভাইদের, রাজার ছেলেদের ও যিহূদার সমস্ত রাজকর্মচারীদের নিমন্ত্রণ করল।
আদোনিয় পরে ঐন-রোগেলের কাছে অবস্থিত সোহেলৎ পাথরে কয়েকটি মেষ, গবাদি পশু ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুর বলি দিয়েছিল। সে তার সব ভাইকে, অর্থাৎ রাজার ছেলেদের, ও যিহূদার সব কর্মকর্তাকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল,
10 ১০ কিন্তু সে ভাববাদী নাথন, বনায়, দায়ূদের বীর যোদ্ধাদের আর তার ভাই শলোমনকে নিমন্ত্রণ করল না।
কিন্তু সে ভাববাদী নাথনকে বা বনায়কে বা বিশেষ রক্ষীদলকে অথবা তার ভাই শলোমনকে নিমন্ত্রণ জানায়নি।
11 ১১ তখন নাথন শলোমনের মা বৎশেবাকে বলল, “আমাদের মনিব দায়ূদের অজান্তে হগীতের ছেলে আদোনিয় যে রাজা হয়েছে তা কি আপনি শোনেন নি?
তখন শলোমনের মা বৎশেবাকে নাথন জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি শোনেননি যে হগীতের ছেলে আদোনিয় রাজা হয়েছে, এবং আমাদের মনিব দাউদ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না?
12 ১২ আপনি কেমন করে আপনার নিজের ও আপনার ছেলে শলোমনের প্রাণ রক্ষা করতে পারবেন, আমি এখন আপনাকে সেই পরামর্শ দিচ্ছি।
তবে এখন, কীভাবে আপনি নিজের ও আপনার ছেলে শলোমনের প্রাণরক্ষা করবেন, সে বিষয়ে আমি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি।
13 ১৩ আপনি এখনই রাজা দায়ূদের কাছে গিয়ে বলুন, ‘আমার প্রভু মহারাজ, আপনার দাসীর কাছে কি আপনি এই বলে প্রতিজ্ঞা করেন নি যে, আপনার পরে নিশ্চয়ই আপনার ছেলে শলোমনই রাজা হবে এবং সেই আপনার সিংহাসনে বসবে? তাহলে কেন আদোনিয় রাজা হয়েছে?’
রাজা দাউদের কাছে যান ও তাঁকে গিয়ে বলুন, ‘হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি আপনার দাসীর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেননি: “তোমার ছেলে শলোমন অবশ্যই আমার পরে রাজা হবে, ও সেই আমার সিংহাসনে বসবে”? তবে আদোনিয় কেন রাজা হল?’
14 ১৪ আপনি যখন রাজার সঙ্গে কথা বলতে থাকবেন তখন আমিও সেখানে গিয়ে আপনার কথায় সায় দেব।”
মহারাজের সঙ্গে আপনার কথাবার্তা শেষ হওয়ার আগেই আমি সেখানে পৌঁছে যাব ও আপনার বলা কথার সঙ্গে আমার নিজের কথাও যোগ করব।”
15 ১৫ পরে বৎশেবা রাজার ঘরে গেলেন। সেই দিন রাজা খুব বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন এবং শূনেমীয়া অবীশগ তাঁর দেখাশোনা করছিল।
অতএব বৎশেবা বৃদ্ধ রাজামশাইকে দেখতে তাঁর ঘরে গেলেন। সেখানে তখন শূনেমীয়া অবীশগ তাঁর যত্নআত্তি করছিল।
16 ১৬ বৎশেবা রাজার সামনে উপুড় হয়ে প্রণাম করলেন। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি চাও?”
বৎশেবা মহারাজের সামনে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন। “তুমি কী চাও?” রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন।
17 ১৭ বৎশেবা তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনি নিজেই আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে শপথ করে আপনার এই দাসীকে বলেছিলেন যে, আমার পরে তোমার ছেলে শলোমন রাজত্ব করবে, সেই আমার সিংহাসনে বসবে।
বৎশেবা তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে আপনি নিজেই আপনার এই দাসী—আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন: ‘তোমার ছেলে শলোমন আমার পরে রাজা হবে, ও সে আমার সিংহাসনে বসবে।’
18 ১৮ এখন, দেখুন, আদোনিয় রাজা হয়েছে আর আপনি, আমার প্রভু মহারাজ, এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।
কিন্তু এখন আদোনিয় রাজা হয়ে গিয়েছে, এবং আপনি, আমার প্রভু মহারাজ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
19 ১৯ সে অনেক গরু, মোটাসোটা বাছুর ও ভেড়া উৎসর্গ করেছে এবং রাজার সব ছেলেদের, যাজক অবিয়াথরকে ও সেনাপতি যোয়াবকে নিমন্ত্রণ করেছে, কিন্তু আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করে নি।
সে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু, হৃষ্টপুষ্ট বাছুর ও মেষ বলি দিয়েছে, এবং রাজার ছেলেদের সবাইকে, যাজক অবিয়াথরকে ও সেনাপতি যোয়াবকে নিমন্ত্রণ করেছে, অথচ আপনার দাস শলোমনকে নিমন্ত্রণ করেননি।
20 ২০ হে আমার প্রভু মহারাজ, সমস্ত ইস্রায়েলের চোখ আপনার উপর রয়েছে। তারা আপনার কাছ থেকে জানতে চায় আপনার পরে কে আমার প্রভু মহারাজের সিংহাসনে বসবে।
হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনার পরে আমার প্রভু মহারাজের সিংহাসনে কে বসবে তা জানার জন্য ইস্রায়েলে সবার চোখের দৃষ্টি আপনার উপর স্থির হয়ে আছে।
21 ২১ তা না হলে যখনই আমার মালিক মহারাজ তাঁর পূর্বপুরুষদের ন্যায় চলে যাবেন তখনই আমাকে ও আমার ছেলে শলোমনকে দোষী বলে ধরা হবে।”
তা না হলে, আমার প্রভু মহারাজ যেই না তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হবেন, আমার সঙ্গে ও আমার ছেলে শলোমনের সঙ্গে তখন অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হবে।”
22 ২২ রাজার সঙ্গে বৎশেবার কথা শেষ হতে না হতেই ভাববাদী নাথন সেখানে উপস্থিত হলেন।
তিনি তখনও রাজার সঙ্গে কথা বলছিলেন, এমন সময় ভাববাদী নাথন সেখানে পৌঁছেছিলেন।
23 ২৩ তখন কেউ একজন রাজাকে বলল, “ভাববাদী নাথন এখানে এসেছেন।” তখন সে রাজার সামনে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম জানালেন।
রাজামশাইকে বলা হল, “ভাববাদী নাথন এখানে এসেছেন।” অতএব তিনি রাজার সামনে গিয়ে উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন।
24 ২৪ তারপর নাথান রাজাকে বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি ঘোষণা করেছেন যে, আপনার পরে আদোনিয় রাজা হবে, আর সেই আপনার সিংহাসনে বসবে?
নাথন বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি ঘোষণা করেছেন যে আপনার পরে আদোনিয়ই রাজা হবে ও সেই আপনার সিংহাসনে বসবে?
25 ২৫ সে তো আজ গিয়ে অনেক ষাঁড়, মোটাসোটা বাছুর এবং ভেড়া বলিদান করে রাজার সব ছেলেদের, সেনাপতিদের এবং পুরোহিত অবিয়াথরকে নিমন্ত্রণ করেছে। এখন তারা তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করছে আর বলছে, ‘রাজা আদোনিয় চিরজীবী হোন।’
আজই সে নিচে নেমে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু, হৃষ্টপুষ্ট বাছুর ও মেষ বলি দিয়েছে। সে রাজার ছেলেদের সবাইকে, সৈন্যদলের সেনাপতিদের ও যাজক অবিয়াথরকে নিমন্ত্রণ করল। ঠিক এই মুহূর্তে তারা তার সঙ্গে বসে ভোজনপান করছে ও বলছে, ‘রাজা আদোনিয় চিরজীবী হোন!’
26 ২৬ আপনার দাস আমাকে, যাজক সাদোককে, যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এবং আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করে নি।
কিন্তু আপনার এই দাস আমাকে, যাজক সাদোককে, ও যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এবং আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করেননি।
27 ২৭ আমার প্রভু মহারাজের পরে কে সিংহাসনে বসবে তা কি আমার প্রভু মহারাজ তাঁর দাসদের না জানিয়েই ঠিক করেছেন?” শলোমন রাজা হলেন
আমার প্রভু মহারাজের পরে তাঁর সিংহাসনে কে বসবে সে বিষয়ে তাঁর দাসদের কিছু না জানিয়ে কি আমার প্রভু মহারাজ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?”
28 ২৮ তখন রাজা দায়ূদ বললেন, “বৎশেবাকে আমার কাছে ডাক।” তাতে বৎশেবা রাজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।
তখন রাজা দাউদ বললেন, “বৎশেবাকে ডেকে আনো।” অতএব তিনি রাজার কাছে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন।
29 ২৯ রাজা তখন শপথ করে বললেন, “যিনি আমাকে সমস্ত বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে,
রাজামশাই তখন একটি শপথ নিয়েছিলেন: “যিনি আমাকে সব বিপত্তি থেকে রক্ষা করেছেন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি,
30 ৩০ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে যে শপথ আমি তোমার কাছে করেছিলাম আজ আমি নিশ্চয়ই তা পালন করব। তোমার ছেলে শলোমন আমার পরে রাজা হবে আর সেই আমার জায়গায় সিংহাসনে বসবে।”
আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে তোমার কাছে যে প্রতিজ্ঞাটি করলাম, সেটি আমি অবশ্যই পালন করব: তোমার ছেলে শলোমনই আমার পরে রাজা হবে, আর আমার স্থানে আমার সিংহাসনে সেই বসবে।”
31 ৩১ তখন বৎশেবা মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করে রাজাকে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজ দায়ূদ চিরজীবী হোন।”
তখন বৎশেবা মাটিতে উবুড় হয়ে রাজামশাইকে প্রণাম করে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজ দাউদ, চিরজীবী হোন!”
32 ৩২ রাজা দায়ূদ বললেন, “যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন এবং যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে আমার কাছে ডেকে আন।” তাঁরা রাজার কাছে আসলেন।
রাজা দাউদ বললেন, “যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে ডেকে আনো।” তারা রাজার সামনে আসার পর
33 ৩৩ রাজা তাঁদের বললেন, “আপনারা আমার দাসদেরকে সঙ্গে নিন এবং আমার ছেলে শলোমনকে আমার নিজের খচ্চরে বসিয়ে তাকে নিয়ে গীহোন উপত্যকায় নেমে যান।
তিনি তাদের বললেন: “তোমরা তোমাদের মনিবের দাসদের সঙ্গে নাও ও আমার ছেলে শলোমনকে আমার নিজস্ব খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে তাকে নিয়ে গীহোন জলের উৎসে নেমে যাও।
34 ৩৪ যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন সেখানে তাকে ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অভিষেক করুন। তারপর আপনারা তূরী বাজিয়ে চিৎকার করে বলুন, ‘রাজা শলোমন চিরজীবী হোন।’
সেখানে গিয়ে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাকে ইস্রায়েলের উপর রাজপদে অভিষিক্ত করুক। তোমরা শিঙা বাজিয়ে চিৎকার করে বোলো, ‘রাজা শলোমন দীর্ঘজীবী হোন!’
35 ৩৫ এর পর আপনারা তার পিছনে পিছনে ফিরে আসবেন। সে এসে আমার সিংহাসনে বসবে এবং আমার জায়গায় রাজত্ব করবে। আমি তাকে ইস্রায়েল ও যিহূদার শাসনকর্ত্তা নিযুক্ত করলাম।”
পরে তোমরা তার সঙ্গে থেকে উপরে উঠে যেয়ো ও সে এসে আমার সিংহাসনে বসে আমার স্থানে রাজত্ব করুক। আমি তাকে ইস্রায়েল ও যিহূদার উপর শাসক নিযুক্ত করলাম।”
36 ৩৬ তখন যিহোয়াদার ছেলে বনায় রাজাকে বললেন, “আমেন। আমাদের প্রভু মহারাজের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাই করুন।
যিহোয়াদার ছেলে বনায় রাজামশাইকে উত্তর দিলেন, “আমেন! আমার প্রভু মহারাজের ঈশ্বর সদাপ্রভুও এরকমই ঘোষণা করুন।
37 ৩৭ সদাপ্রভু যেমন আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে থেকেছেন তেমনি শলোমনের সঙ্গেও থাকুন এবং আমার প্রভু রাজা দায়ূদের রাজ্যের চেয়েও তাঁর রাজ্য আরও বড় করুন!”
সদাপ্রভু যেমন আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, তিনি যেন সেভাবেই শলোমনেরও সঙ্গে সঙ্গে থাকেন ও তাঁর সিংহাসন আমার প্রভু মহারাজ দাউদের সিংহাসনের চেয়েও বড়ো করলেন!”
38 ৩৮ তখন যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়েরা গিয়ে শলোমনকে রাজা দায়ূদের খচ্চরে বসিয়ে গীহোনে নিয়ে গেলেন।
অতএব যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয়রা ও পলেথীয়রা শলোমনকে রাজা দাউদের খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে, তাঁর সমগামী হয়ে তাঁকে গীহোনে নিয়ে গেলেন।
39 ৩৯ যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবু থেকে তেলের শিঙ্গাটা নিয়ে এসে শলোমনকে অভিষেক করলেন। তারপর তাঁরা তূরী বাজালেন এবং সমস্ত লোকেরা চিৎকার করে বলল, “রাজা শলোমন চিরজীবী হোন।”
যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবু থেকে তেলের সেই শিং নিয়ে এসে শলোমনকে অভিষিক্ত করলেন। পরে তারা শিঙা বাজিয়েছিলেন ও সব লোকজন চিৎকার করে উঠেছিল, “রাজা শলোমন দীর্ঘজীবী হোন!”
40 ৪০ তারপর সমস্ত লোক বাঁশী বাজাতে বাজাতে এবং খুব আনন্দ করতে করতে শলোমনের পিছনে পিছনে ফিরে আসল। তারা এমনভাবে আনন্দ করল যে, তার শব্দে পৃথিবী কেঁপে উঠল।
সব লোকজন তাঁর পিছু পিছু বাঁশি বাজিয়ে ও মহানন্দে এমনভাবে ছুটতে শুরু করল, যে সেই শব্দে মাটি কেঁপে উঠেছিল।
41 ৪১ সেই দিন আদোনিয় ও সমস্ত নিমন্ত্রিত লোকেরা খাওয়ার শেষের দিকে সেই শব্দ শুনল। তূরীর আওয়াজ শুনে যোয়াব জিজ্ঞাসা করল, “শহরে এই সব গোলমাল হচ্ছে কেন?”
আদোনিয় ও তার সঙ্গে থাকা সব অতিথি ভোজসভার ভোজনপান প্রায় শেষ করে এসেছে, এমন সময় তারা সেই শব্দ শুনতে পেয়েছিল। শিঙার শব্দ শুনতে পেয়ে যোয়াব জিজ্ঞাসা করলেন, “নগরে কী এত চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে?”
42 ৪২ তাঁর কথা শেষ হতে না হতেই যাজক অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন সেখানে উপস্থিত হল। আদোনিয় তাকে বলল, “আসুন, আসুন। আপনি তো ভাল লোক, নিশ্চয়ই ভাল সংবাদ এনেছেন।”
তিনি একথা বলতে না বলতেই যাজক অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন সেখানে পৌঁছে গেলেন। আদোনিয় বলল, “আসুন, আসুন। আপনার মতো গুণীজন নিশ্চয় ভালো খবরই নিয়ে এসেছেন।”
43 ৪৩ যোনাথন উত্তর দিল এবং আদোনিয়কে বলল, “আমাদের প্রভু মহারাজ দায়ূদ শলোমনকে রাজা করেছেন।
“একেবারেই না!” যোনাথন আদোনিয়কে উত্তর দিলেন। “আমাদের প্রভু মহারাজ দাউদ শলোমনকে রাজা করেছেন।
44 ৪৪ রাজা তাঁর সঙ্গে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়দের পাঠিয়েছেন। তাঁরা তাঁকে রাজার খচ্চরের উপর বসিয়েছেন,
মহারাজ তাঁর সঙ্গে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়দেরও পাঠালেন, এবং তারা শলোমনকে মহারাজের খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে দিলেন,
45 ৪৫ আর যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন গীহোনে তাঁকে রাজপদে অভিষেক করেছেন। সেখান থেকে লোকেরা আনন্দ করতে করতে ফিরে গিয়েছে আর শহরে সেই গোলমালই হচ্ছে। সেই আওয়াজই আপনারা শুনতে পাচ্ছেন।
এবং যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন গীহোনে তাঁকে রাজপদে অভিষিক্ত করেছেন। সেখান থেকে তারা হর্ষধ্বনি করতে করতে চলে গিয়েছেন, এবং নগরেও তার প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে। তোমরা এই চিৎকারই শুনেছ।
46 ৪৬ এছাড়া শলোমন রাজ সিংহাসনেও বসেছেন,
এছাড়াও, শলোমন রাজসিংহাসনে বসে পড়েছেন।
47 ৪৭ আর রাজার কর্মচারীরা আমাদের মনিব রাজা দায়ূদকে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছে, ‘আপনার ঈশ্বর আপনার নামের চেয়েও শলোমনের নাম মহান করুন এবং আপনার রাজ্যের চেয়েও তাঁর রাজ্য আরও বড় করুন।’ তখন রাজা বিছানার ওপরেই নত হলেন।
আবার, রাজকর্মচারীরা এই বলে আমাদের প্রভু মহারাজ দাউদকে অভিনন্দন জানাতে এসেছে যে, ‘আপনার ঈশ্বর, শলোমনের নাম আপনার নামের চেয়েও বিখ্যাত করে তুলুন এবং তাঁর সিংহাসন আপনার সিংহাসনের চেয়েও বড়ো করে তুলুন!’ মহারাজ নিজের বিছানাতেই আরাধনা করে
48 ৪৮ রাজা আরো বললেন, ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক। আমার সিংহাসনের অধিকারীকে আজ তিনি আমাকে দেখতে দিলেন।’”
বলেছেন, ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা হোক, যিনি আজ আমাকে নিজের চোখেই আমার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী দেখে যাওয়ার সুযোগ দিলেন।’”
49 ৪৯ এই কথা শুনে আদোনিয়ের নিমন্ত্রিত সব লোকেরা খুব ভয় পেল এবং উঠে যে যার পথে চলে গেল।
একথা শুনে আদোনিয়ের অতিথিরা সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল।
50 ৫০ আদোনিয় শলোমনের ভয়ে উঠে গিয়ে বেদির শিং ধরে থাকল।
কিন্তু আদোনিয় শলোমনের ভয়ে গিয়ে যজ্ঞবেদির শিংগুলি আঁকড়ে জড়িয়ে ধরেছিল।
51 ৫১ তখন শলোমনকে কেউ একজন বলল যে, আদোনিয় তাঁর ভয়ে বেদির শিং আঁকড়ে ধরেছে। সে বলেছে, “রাজা শলোমন আজ আমার কাছে শপথ করুন যে, তিনি তাঁর দাসকে মেরে ফেলবেন না।”
তখন শলোমনকে বলা হল, “আদোনিয় রাজা শলোমনের ভয়ে যজ্ঞবেদির শিংগুলি আঁকড়ে ধরে আছে। সে বলছে, ‘রাজা শলোমন আজ আমার কাছে শপথ করে বলুন যে তিনি তাঁর দাসকে তরোয়ালের আঘাতে হত্যা করবেন না।’”
52 ৫২ উত্তরে শলোমন বললেন, “সে যদি নিজেকে ভাল লোক হিসাবে দেখাতে পারে তবে তার মাথার একটা চুলও মাটিতে পড়বে না; কিন্তু যদি তার মধ্যে মন্দ কিছু পাওয়া যায় তবে সে মরবে।”
শলোমন উত্তর দিলেন, “সে যদি নিজেকে অনুগত প্রমাণিত করতে পারে, তবে তার মাথার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না; কিন্তু যদি তার মধ্যে দুষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়, তবে তাকে মরতেই হবে।”
53 ৫৩ এই বলে রাজা শলোমন লোক পাঠিয়ে দিলেন আর তারা গিয়ে আদোনিয়কে বেদী থেকে নিয়ে আসল। আদোনিয় এসে রাজা শলোমনের সামনে মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলো। শলোমন বললেন, “তোমার ঘরে চলে যাও।”
পরে রাজা শলোমন লোক পাঠালেন, ও তারা তাকে যজ্ঞবেদি থেকে নামিয়ে এনেছিল। আদোনিয় এসে রাজা শলোমনের কাছে নতজানু হল, ও শলোমন বললেন, “তোমার ঘরে ফিরে যাও।”

< প্রথম রাজাবলি 1 >