< প্রথম রাজাবলি 3 >

1 শলোমন মিশরের রাজা ফরৌণের মেয়েকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করলেন। শলোমনের রাজবাড়ী, সদাপ্রভুর ঘর এবং যিরূশালেমের চারপাশের দেয়াল গাঁথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর স্ত্রীকে দায়ূদ শহরেই রাখলেন।
وَتَزَوَّجَ سُلَيْمَانُ ابْنَةَ فِرْعَوْنَ مَلِكِ مِصْرَ، وَأَحْضَرَهَا إِلَى مَدِينَةِ دَاوُدَ رَيْثَمَا يَتِمُّ إِكْمَالُ بِنَاءِ قَصْرِهِ وَبَيْتِ الرَّبِّ والسُّورِ الْمُحِيطِ بِأُورُشَلِيمَ.١
2 লোকেরা তখনও উপাসনার উঁচু জায়গাগুলোতে তাদের পশু বলিদানের অনুষ্ঠান করত, কারণ তখনও সদাপ্রভুর উপাসনার জন্য কোনো ঘর তৈরী করা হয়নি।
وَكَانَ الشَّعْبُ آنَئِذٍ يُقَدِّمُونَ ذَبَائِحَ عَلَى الْمُرْتَفَعَاتِ، لأَنَّ بَيْتَ الرَّبِّ لَمْ يَكُنْ قَدْ بُنِيَ بَعْدُ.٢
3 শলোমন সদাপ্রভুকে ভালবাসতেন, সেইজন্য তাঁর বাবা দায়ূদের আদেশ অনুসারে জীবনযাপন করতেন; কিন্তু তিনি উপাসনার উঁচু জায়গাগুলোতে পশু বলিদান করতেন এবং ধূপ জ্বালাতেন।
وَأَحَبَّ سُلَيْمَانُ الرَّبَّ وَسَارَ فِي فَرَائِضِ دَاوُدَ أَبِيهِ، إِلاَّ أَنَّهُ وَاظَبَ عَلَى تَقْدِيمِ ذَبَائِحَ وَإِيقَادِ بَخُورٍ عَلَى الْمُرْتَفَعاتِ.٣
4 রাজা একদিন পশু বলিদানের জন্য গিবিয়োনে গিয়েছিলেন, কারণ উৎসর্গের জন্য সেখানকার উপাসনার উঁচু স্থানটা ছিল প্রধান। শলোমন সেখানে এক হাজার পশু দিয়ে হোমবলির অনুষ্ঠান করলেন।
وَمَضَى سُلَيْمَانُ إِلَى جِبْعُونَ، الْمُرْتَفَعَةِ الْعُظْمَى، وَأَصْعَدَ هُنَاكَ أَلْفَ مُحْرَقَةٍ عَلَى ذَلِكَ الْمَذْبَحِ.٤
5 গিবিয়োনে রাতের বেলা সদাপ্রভু স্বপ্নের মধ্যে শলোমনের কাছে উপস্থিত হলেন। ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “বল, আমি তোমাকে কি দেব?”
وَفِي جِبْعُونَ تَرَاءَى الرَّبُّ لَهُ لَيْلاً فِي حُلْمٍ، وَقَالَ لَهُ: «اطْلُبْ مَاذَا أُعْطِيكَ؟»٥
6 উত্তরে শলোমন বললেন, “তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদকে তুমি অনেক বিশ্বস্ততা দেখিয়েছ, কারণ তিনি তোমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন এবং খাঁটি ও সৎ ছিলেন। আজ তাঁর সিংহাসনে বসবার জন্য তুমি তাঁকে একটি ছেলে দিয়েছ এবং এই ভাবে তোমার সেই সীমাহীন বিশ্বস্ততা তাঁকে দেখিয়ে যাচ্ছ।
فَأَجَابَ: «لَقَدْ صَنَعْتَ إِلَى عَبْدِكَ دَاوُدَ أَبِي رَحْمَةً وَاسِعَةً لأَنَّهُ سَلَكَ أَمَامَكَ بِأَمَانَةٍ وَصَلاَحٍ وَاسْتِقَامَةِ قَلْبٍ، فَلَمْ تَحْرِمْهُ مِنَ الرَّحْمَةِ الْعَظِيمَةِ، وَرَزَقْتَهُ ابْناً يَخْلُفُهُ عَلَى عَرْشِهِ فِي هَذَا الْيَوْمِ.٦
7 হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমার বাবা দায়ূদের জায়গায় তুমি এখন তোমার দাসকে রাজা করেছ। কিন্তু বয়স আমার খুবই কম, আমি জানি না কি করে বাইরে যেতে হয় এবং ভিতরে আসতে হয়।
وَالآنَ أَيُّهَا الرَّبُّ إِلَهِي، لَقَدْ جَعَلْتَ عَبْدَكَ مَلِكاً خَلَفاً لِدَاوُدَ أَبِي، وَأَنَا مَا بَرِحْتُ فَتىً صَغِيراً غَيْرَ مُتَمَرِّسٍ بِشُؤُونِ الْحُكْمِ،٧
8 এখানে তোমার দাস তোমার বেছে নেওয়া লোকদের মধ্যে রয়েছে। তারা এমন একটা মহাজাতি যে, তাদের সংখ্যা গণনা করা যায় না।
وَعَبْدُكَ يَتَوَلَّى حُكْمَ شَعْبِكَ الَّذِي اخْتَرْتَهُ، وَهُوَ شَعْبٌ أَعْظَمُ مِنْ أَنْ يُعَدَّ أَوْ يُحْصَى لِكَثْرَتِهِ.٨
9 সেইজন্য তোমার লোকদের শাসন করবার জন্য এবং কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল তা জানবার জন্য তুমি তোমার দাসের মনে বোঝবার ক্ষমতা দাও। কারণ কার সাধ্য আছে তোমার এই মহাজাতির বিচার করে?”
فَهَبْ عَبْدَكَ قَلْباً فَهِيماً لأَقْضِيَ بَيْنَ شَعْبِكَ، وَأُمَيِّزَ بَيْنَ الْخَيْرِ وَالشَّرِّ، لأَنَّهُ مَنْ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَحْكُمَ شَعْبَكَ الْعَظِيمَ هَذَا؟»٩
10 ১০ শলোমনের এই অনুরোধ সদাপ্রভুকে সন্তুষ্ট করল।
فَسُرَّ الرَّبُّ بِطَلَبِ سُلَيْمَانَ هَذَا.١٠
11 ১১ ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তুমি অনেক আয়ু, কিম্বা নিজের জন্য ধন সম্পদ, কিম্বা তোমার শত্রুদের মৃত্যু না চেয়ে যখন সুবিচার করবার জন্য বোঝবার ক্ষমতা চেয়েছ,
وَقَالَ لَهُ: «لأَنَّكَ قَدْ طَلَبْتَ هَذَا الأَمْرَ، وَلَمْ تَطْلُبْ حَيَاةً طَوِيلَةً، وَلاَ غِنىً، وَلاَ انْتِقَاماً مِنْ أَعْدَائِكَ، بَلْ سَأَلْتَ حِكْمَةً لِتَسُوسَ شُؤُونَ الْحُكْمِ،١١
12 ১২ তখন তুমি যা চেয়েছ তাই আমি তোমাকে দেব। আমি তোমার অন্তরে এমন জ্ঞান ও বিচারবুদ্ধি দিলাম যার জন্য দেখা যাবে যে, এর আগে তোমার মত আর কেউ ছিল না আর পরেও হবে না।
فَإِنَّنِي سَأُلَبِّي طَلَبَكَ، فَأَهَبُكَ قَلْباً حَكِيماً مُمَيِّزاً، فَلاَ يُضَاهِيكَ أَحَدٌ مِنْ قَبْلُ وَلاَ مِنْ بَعْدُ.١٢
13 ১৩ আমি তোমাকে সেটা দিলাম যেটা তুমি চাওনি। আমি তোমাকে এমন ধন সম্পদ ও সম্মান দিলাম যার ফলে তোমার জীবনকালে রাজাদের মধ্যে আর কেউ তোমার সমান হবে না।
وَقَدْ أَنْعَمْتُ عَلَيْكَ أَيْضاً بِمَا لَمْ تَسْأَلْهُ، مِنْ غِنىً وَمَجْدٍ، حَتَّى لاَ يَكُونَ لَكَ نَظِيرٌ بَيْنَ الْمُلُوكِ فِي أَيَّامِكَ.١٣
14 ১৪ তোমার বাবা দায়ূদের মত করে যদি তুমি আমার সব নিয়ম ও আদেশ পালন করার জন্য আমার পথে চল তবে আমি তোমাকে অনেক আয়ু দেব।”
فَإِنْ سَلَكْتَ فِي طَرِيقِي وَأَطَعْتَ فَرَائِضِي وَوَصَايَايَ، كَمَا سَلَكَ أَبُوكَ، فَإِنِّي أُطِيلُ أَيَّامَكَ».١٤
15 ১৫ এর পর শলোমন জেগে উঠলেন আর বুঝতে পারলেন যে, ওটা একটা স্বপ্ন ছিল। পরে শলোমন যিরূশালেমে ফিরে গিয়ে সদাপ্রভুর সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে দাঁড়ালেন এবং অনেক পশু দিয়ে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলির অনুষ্ঠান করলেন। তারপর তাঁর সমস্ত কর্মচারীদের জন্য একটা ভোজ দিলেন।
وَعِنْدَمَا اسْتَيْقَظَ سُلَيْمَانُ مِنْ نَوْمِهِ أَدْرَكَ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ حُلْماً، فَعَادَ إِلَى أُورُشَلِيمَ وَوَقَفَ أَمَامَ تَابُوتِ عَهْدِ الرَّبِّ وَقَرَّبَ مُحْرَقَاتٍ وَذَبَائِحَ سَلاَمٍ، وَأَقَامَ وَلِيمَةً لِكُلِّ رِجَالِهِ.١٥
16 ১৬ সেই দিনের দুইজন বেশ্যা স্ত্রীলোক এসে রাজার সামনে দাঁড়াল।
بَعْدَ ذَلِكَ حَضَرَتِ امْرَأَتَانِ عَاهِرَتَانِ إِلَى الْمَلِكِ لِيَقْضِيَ بَيْنَهُمَا،١٦
17 ১৭ তাদের মধ্যে একজন বলল, “হে আমার প্রভু, এই স্ত্রীলোকটী এবং আমি একই ঘরে থাকি। সে সেখানে থাকবার দিন আমার একটি সন্তান প্রসব হয়।
فَقَالَتْ إِحْدَاهُمَا: «اسْتَمِعْ يَاسَيِّدِي، إِنَّنِي وَهَذِهِ الْمَرْأَةَ مُقِيمَتَانِ فِي بَيْتٍ وَاحِدٍ وَرُزِقْتُ بِطِفْلٍ،١٧
18 ১৮ আমার প্রসবের তিন দিন পরে এই স্ত্রীলোকটিও প্রসব করল। ঘরে আর কেউ ছিল না, শুধু আমরা দুইজনই ছিলাম।
وَرُزِقَتْ هِيَ بِطِفْلٍ أَيْضاً بَعْدِي بِثَلاَثَةِ أَيَّامٍ، وَكُنَّا مَعاً، لاَ يُقِيمُ بَيْنَنَا غَرِيبٌ فِي الْبَيْتِ. كُنَّا وَحْدَنَا فَقَطْ فِي الْبَيْتِ.١٨
19 ১৯ রাতের বেলা এই স্ত্রীলোকটী ছেলেটির উপর শুয়ে পড়ায় তার সন্তানটি মারা গেল।
فَمَاتَ طِفْلُ هَذِهِ الْمَرْأَةِ عِنْدَمَا انْقَلَبَتْ عَلَيْهِ فِي أَثْنَاءِ نَوْمِهَا.١٩
20 ২০ মাঝ রাতে আপনার দাসী আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম, তখন সে উঠে আমার পাশ থেকে আমার সন্তানকে নিয়ে নিজের বুকের কাছে রাখল আর তার মরা সন্তানকে নিয়ে আমার বুকের কাছে রাখল।
فَنَهَضَتْ فِي مُنْتَصَفِ اللَّيْلِ وَأَنَا مُسْتَغْرِقَةٌ فِي النَّوْمِ، وَأَخَذَتْ طِفْلِي مِنْ جَانِبِي وَأَضْجَعَتْهُ فِي حِضْنِهَا، وَأَضْجَعَتِ ابْنَهَا الْمَيْتَ فِي حِضْنِي.٢٠
21 ২১ ভোররাতে আমার সন্তানকে দুধ খাওয়াতে উঠে দেখলাম ছেলেটি মরা। সকালের আলোতে আমি যখন তাকে ভাল করে দেখলাম তখন বুঝলাম সে আমার নিজের জন্ম দেওয়া ছেলে নয়।”
فَلَمَّا هَمَمْتُ بِإِرْضَاعِ ابْنِي فِي الصَّبَاحِ وَجَدْتُهُ مَيْتاً، وَحِينَ تَأَمَّلْتُ فِيهِ فِي ضَوْءِ النَّهَارِ تَبَيَّنْتُ أَنَّهُ لَيْسَ طِفْلِي الَّذِي أَنْجَبْتُهُ».٢١
22 ২২ তখন অন্য স্ত্রীলোকটী বলল, “না, না, জীবিত ছেলেটি আমার আর মরাটা তোমার।” কিন্তু প্রথমজন জোর দিয়ে বলল, “না, মরাটা তোমার আর জীবিতটা আমার।” এই ভাবে রাজার সামনেই তারা কথা বলতে লাগল।
وَشَرَعَتِ الْمَرْأَةُ الأُخْرَى تُقَاطِعُهَا قَائِلَةً: «كَلًّا. إِنَّ ابْنِي هُوَ الْحَيُّ، وَابْنَكِ هُوَ الْمَيْتُ». فَتَرُدُّ عَلَيْهَا الأُخْرَى: «بَلِ ابْنُكِ هُوَ الْمَيْتُ وَابْنِي هُوَ الْحَيُّ». وَهَكَذَا اشْتَدَّ الْجَدَلُ أَمَامَ الْمَلِكِ،٢٢
23 ২৩ রাজা বললেন, “এ বলছে, ‘আমার ছেলে বেঁচে আছে আর তোমারটা মারা গেছে।’ আবার ও বলছে, ‘না, না, তোমার ছেলে মারা গেছে আমারটা বেঁচে আছে’।”
فَقَالَ الْمَلِكُ: «كُلٌّ مِنْكُمَا تَدَّعِي أَنَّ الابْنَ الْحَيَّ هُوَ ابْنُهَا وَأَنَّ الابْنَ الْمَيْتَ هُوَ ابْنُ الأُخْرَى.٢٣
24 ২৪ তখন রাজা বললেন, “আমাকে একটা তলোয়ার দাও।” তখন রাজার কাছে একটা তলোয়ার আনা হল।
لِذَلِكَ اِيتُونِي بِسَيْفٍ». فَأَحْضَرُوا لِلْمَلِكِ سَيْفاً.٢٤
25 ২৫ তিনি হুকুম দিলেন, “জীবিত ছেলেটিকে কেটে দুইভাগ কর এবং একে অর্ধেক আর ওকে অর্ধেক দাও।”
فَقَالَ الْمَلِكُ: «اشْطُرُوا الطِّفْلَ الْحَيَّ إِلَى شَطْرَيْنِ، وَأَعْطَوا كُلاًّ مِنْهُمَا شَطْراً».٢٥
26 ২৬ যার ছেলেটি বেঁচে ছিল ছেলের জন্য সেই স্ত্রীলোকের হৃদয় অনুকম্পায় ভরে যাওয়াতে সে রাজাকে বলল, “হে আমার প্রভু, মিনতি করি, ওকেই আপনি জীবিত ছেলেটি দিয়ে দিন; ছেলেটিকে মেরে ফেলবেন না।” কিন্তু অন্য স্ত্রীলোকটী বলল, “ও তোমারও না হোক আর আমারও না হোক। ওকে কেটে দুই টুকরো কর।”
فَالْتَهَبَتْ مَشَاعِرُ الأُمِّ الْحَقِيقِيَّةِ وَقَالَتْ لِلْمَلِكِ: «أَصْغِ يَاسَيِّدِي، أَعْطِهَا الطِّفْلَ وَلاَ تُمِيتُوهُ». أَمَّا الْمَرْأَةُ الأُخْرَى فَكَانَتْ تَقُولُ: «لَنْ يَكُونَ لَكِ وَلاَ لِي: اشْطُرُوهُ».٢٦
27 ২৭ রাজা তখন তাঁর রায় দিয়ে বললেন, “জীবিত ছেলেটি ঐ প্রথম স্ত্রীলোকটীকে দাও। ওকে কেটো না; ওই ওর মা।”
عِنْدَئِدٍ قَالَ الْمَلِكُ: «أَعْطُوا الطِّفْلَ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي أَرَادَتْ لَهُ الْحَيَاةَ، فَهِيَ أُمُّهُ».٢٧
28 ২৮ রাজার দেওয়া রায় শুনে ইস্রায়েলের সকলের মনে রাজার প্রতি ভক্তিপূর্ণ ভয় জেগে উঠল, কারণ তারা দেখতে পেল যে, সুবিচার করবার জন্য তাঁর মনে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান রয়েছে।
وَلَمَّا سَرَى نَبَأُ هَذَا الْحُكْمِ الَّذِي صَدَرَ عَنِ الْمَلِكِ بَيْنَ شَعْبِ إِسْرَائِيلَ، امْتَلأُوا تَوْقِيراً لَهُ، لأَنَّهُمْ رَأَوْا فِيهِ حِكْمَةَ اللهِ لإِجْرَاءِ الْعَدْلِ.٢٨

< প্রথম রাজাবলি 3 >