< বংশাবলির প্রথম খণ্ড 22 >

1 এর পর দায়ূদ বললেন, “ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর এবং ইস্রায়েলের হোমবলির বেদির স্থান এখানেই হবে।”
পরে দাউদ বললেন, “সদাপ্রভু ঈশ্বরের ভবনটি, এবং ইস্রায়েলের জন্য হোমবলির বেদিটিও এখানেই থাকবে।”
2 বিভিন্ন জাতির যে সব লোকেরা ইস্রায়েল দেশে বাস করত দায়ূদ আদেশ দিলেন যেন তাদের জড়ো করা হয়। তাদের মধ্য থেকে তিনি পাথর কাটবার লোকদের বেছে নিলেন যাতে ঈশ্বরের ঘর তৈরীর জন্য তারা পাথর কেটে ছেঁটে প্রস্তুত করতে পারে।
অতএব দাউদ ইস্রায়েলে বসবাসকারী বিদেশিদের সমবেত করার আদেশ দিলেন এবং ঈশ্বরের ভবন তৈরির কাজে ব্যবহারযোগ্য কাটছাঁট করা পাথরের কাজ করার জন্য তাদের মধ্যে থেকেই কয়েকজন পাথর কাটার লোক নিযুক্ত করলেন।
3 ফটকগুলোর দরজার পেরেক ও কব্‌জার জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে লোহা দিলেন, আর এত পিতল দিলেন যে, তা ওজন করা যায় না।
সদর-দরজার পাল্লায় ও কব্জায় পেরেক লাগানোর জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে লোহার জোগান দিলেন, এবং তিনি এত ব্রোঞ্জের জোগান দিলেন, যা ওজন করে দেখাও সম্ভব হয়নি।
4 এছাড়া তিনি অসংখ্য এরস কাঠও দিলেন, কারণ সীদোনীয় ও সোরীয়েরা দায়ূদকে প্রচুর এরস কাঠ এনে দিয়েছিল।
এছাড়াও তিনি এত দেবদারু কাঠের গুঁড়ির জোগান দিলেন, যা গুনে দেখা সম্ভব হয়নি, কারণ সীদোনীয় ও সোরীয়রা দাউদের কাছে প্রচুর পরিমাণে দেবদারু কাঠ এনেছিল।
5 দায়ূদ বললেন, “আমার ছেলে শলোমনের বয়স কম এবং তার অভিজ্ঞতাও কম, কিন্তু সদাপ্রভুর জন্য যে ঘর তৈরী করতে হবে তা যেন সমস্ত জাতির চোখে খুব বিখ্যাত এবং জাঁকজমকে ও গৌরবে পূর্ণ হয়। কাজেই তার জন্য আমি সব কিছু প্রস্তুত করে রাখব।” এই বলে দায়ূদ তাঁর মৃত্যুর আগে অনেক কিছুর আয়োজন করে রাখলেন।
দাউদ বললেন, “আমার ছেলে শলোমনের বয়স কম ও সে অনভিজ্ঞও বটে, এবং সদাপ্রভুর জন্য যে ভবনটি তৈরি করা হবে, সেটি সব জাতির দৃষ্টিতে হবে বিশাল জাঁকজমকপূর্ণ ও বিখ্যাত এবং জৌলুসে ভরপুর। তাই আমিই সেটির জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেব।” অতএব মারা যাওয়ার আগেই দাউদ ব্যপক প্রস্তুতি সেরে রেখেছিলেন।
6 তারপর তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে ডেকে তাঁর উপর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ভার দিলেন।
পরে তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে ডেকে তাঁর হাতে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য এক ভবন তৈরি করার ভার সঁপে দিলেন।
7 দায়ূদ শলোমনকে বললেন, “হে আমার পুত্র, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ইচ্ছা আমার অন্তরে ছিল।
দাউদ শলোমনকে বললেন: “বাছা, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে একটি ভবন তৈরি করার বাসনা আমার অন্তরে ছিল।
8 কিন্তু সদাপ্রভুর এই কথা আমাকে জানানো হল, ‘তুমি অনেক রক্তপাত করেছ এবং অনেক যুদ্ধও করেছ। তুমি আমার নামে ঘর তৈরী করবে না, কারণ আমার চোখের সামনে তুমি পৃথিবীতে অনেক রক্তপাত করেছ।
কিন্তু সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এসেছিল: ‘তুমি প্রচুর রক্তপাত করেছ ও অনেক যুদ্ধ করেছ। আমার নামাঙ্কিত কোনো ভবন তুমি তৈরি করতে পারবে না, কারণ আমার দৃষ্টিতে এই পৃথিবীতে তুমি প্রচুর রক্তপাত করেছ।
9 কিন্তু তোমার একটি ছেলে হবে যে শান্তি ভালবাসবে। তার চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে আমি তাকে শান্তিতে রাখব। তার নাম হবে শলোমন (যার মানে শান্তি), কারণ আমি তার রাজত্বের দিনের ইস্রায়েলকে শান্তিতে ও নিরাপদে রাখব।
কিন্তু তোমার এক ছেলে হবে, যে হবে শান্তি ও বিশ্রামযুক্ত এক মানুষ, এবং আমি তাকে তার চারপাশের সব শত্রুর দিক থেকে বিশ্রাম দেব। তার নাম হবে শলোমন, এবং আমি তার রাজত্বকালে ইস্রায়েলকে শান্তি ও নিস্তরঙ্গ পরিবেশ দেব।
10 ১০ সেই আমার জন্য একটা ঘর তৈরী করবে। সে হবে আমার ছেলে আর আমি হব তার বাবা। ইস্রায়েলের উপরে তার রাজত্ব আমি চিরকাল স্থায়ী করব’।”
সেই আমার নামাঙ্কিত এক ভবন তৈরি করবে। সে আমার ছেলে হবে ও আমি তার বাবা হব। ইস্রায়েলের উপর তার রাজত্বের সিংহাসন আমি চিরস্থায়ী করব।’
11 ১১ এখন হে আমার পুত্র, সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন; তুমি সফলতা লাভ কর আর সদাপ্রভুর কথামত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর তৈরী কর।
“এখন, বাছা, সদাপ্রভু তোমার সহবর্তী হোন, এবং তুমি সাফল্য লাভ করো ও তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর বলা কথামতো তুমিই তাঁর এক ভবন তৈরি করো।
12 ১২ সদাপ্রভু তোমার উপরে যখন ইস্রায়েলের শাসনভার দেবেন তখন যেন তিনি তোমাকে বুদ্ধি বিবেচনা ও বুঝবার শক্তি দেন যাতে তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আইন কানুন মেনে চলতে পার।
তোমাকে ইস্রায়েলের উপর শাসকপদে নিযুক্ত করার পর সদাপ্রভু যেন তোমাকে প্রজ্ঞা ও বোধবুদ্ধি দেন, যার ফলস্বরূপ তুমি যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিধিবিধান পালন করে যেতে পারো।
13 ১৩ মোশির মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে যে নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছেন তা যদি তুমি যত্নের সঙ্গে পালন কর তাহলেই তুমি সফলতা লাভ করতে পারবে। তুমি শক্তিশালী হও আর মনে সাহস রাখ। ভয় কোরো না কিম্বা নিরাশ হোয়ো না।
ইস্রায়েলের জন্য মোশিকে সদাপ্রভু যে বিধি ও বিধান দিলেন, সেগুলি যদি তুমি সতর্কতাপূর্বক পালন করে যেতে পারো তবে তুমি সাফল্য পাবে। বলবান ও সাহসী হও। ভয় পেয়ো না বা হতাশ হোয়ো না।
14 ১৪ এখন, দেখো, আমি অনেক কষ্ট করে সদাপ্রভুর ঘরের জন্য তিন হাজার নয়শো টন সোনা ও ঊনচল্লিশ হাজার টন রূপা রেখেছি। এছাড়া এত বেশী পিতল ও লোহা রেখেছি যা ওজন করা অসাদ্ধ আর কাঠ এবং পাথরও ঠিক করে রেখেছি। অবশ্য এর সঙ্গে তুমিও কিছু দিতে পারবে।
“সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য আমি খুব কষ্ট করে এক লাখ তালন্ত সোনা, ও দশ লাখ তালন্ত রুপো জোগাড় করেছি, এছাড়াও এত ব্রোঞ্জ ও লোহা জোগাড় করেছি যা ওজন করে দেখা সম্ভব নয়, এবং কাঠ ও পাথরও জোগাড় করেছি। এর সাথে তুমি আরও অনেক কিছু যোগ করতে পারো।
15 ১৫ তোমার অনেক কাজের লোক আছে; তারা হল পাথর কাটবার মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি ও ছুতার মিস্ত্রি।
তোমার কাছে প্রচুর কাজের লোক আছে: পাথর কাটার লোক, রাজমিস্ত্রি ও ছুতোরমিস্ত্রি, এছাড়াও সব ধরনের কাজে দক্ষ লোকও তোমার কাছে আছে
16 ১৬ এছাড়া রয়েছে অন্য সব রকম কাজ করবার ওস্তাদ লোক যারা সোনা, রূপা, পিতল ও লোহার কাজ করতে পারে। এই সব কারিগরদের সংখ্যা অনেক। এখন তুমি কাজ শুরু করে দাও আর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন।
যেমন, সোনা ও রুপো, ব্রোঞ্জ ও লোহার—এত কারিগর আছে, যাদের সংখ্যা গুনে শেষ করা যায় না। এখন তবে কাজ শুরু করো, এবং সদাপ্রভু তোমার সহবর্তী থাকুন।”
17 ১৭ দায়ূদ তারপর তাঁর ছেলে শলোমনকে সাহায্য করবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের হুকুম দিয়ে বললেন,
পরে দাউদ ইস্রায়েলের সব নেতাকে আদেশ দিলেন, যেন তারা তাঁর ছেলে শলোমনকে সাহায্য করেন।
18 ১৮ “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কি তোমাদের সঙ্গে নেই? তিনি কি সব দিকেই তোমাদের শান্তি দেন নি? তিনি তো এই দেশের লোকদের আমার হাতে তুলে দিয়েছেন আর দেশটা সদাপ্রভু ও তাঁর লোকদের অধীন হয়েছে।
তিনি তাদের বললেন, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কি তোমাদের সহবর্তী নন? আর তিনি কি সবদিক থেকে তোমাদের বিশ্রাম দেননি? কারণ দেশের অধিবাসীদের তিনি আমার হাতে সঁপে দিয়েছেন, এবং এই দেশ সদাপ্রভুর ও তাঁর প্রজাদের অধীনস্থ হয়েছে।
19 ১৯ এখন তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য তোমাদের সমস্ত মন প্রাণ স্থির করুন এবং উঠ, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁর পবিত্র ঘরটি তৈরী কর, যাতে তার মধ্যে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুক ও ঈশ্বরের পবিত্র জিনিসগুলো এনে রাখা যায়।”
এখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণ করার জন্য তোমরা তোমাদের মনপ্রাণ সমর্পণ করো। সদাপ্রভু ঈশ্বরের পীঠস্থান তৈরি করার কাজ শুরু করে দাও, যেন যে মন্দিরটি সদাপ্রভুর নামে তৈরি করা হবে সেখানে তোমাদের পক্ষে সদাপ্রভুর সেই নিয়ম-সিন্দুকটি ও ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত পবিত্র জিনিসপত্র আনা সম্ভব হয়।”

< বংশাবলির প্রথম খণ্ড 22 >