< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 5 >

1 সেদিন দবোরা এবং অবীনোয়মের ছেলে বারক এই গানটি গাইলেন: 2 “ইস্রায়েলের নেতারা যখন নেতৃত্বভার হাতে নিলেন, প্রজারা যখন স্বেচ্ছায় নিজেদের উৎসর্গ করল— সদাপ্রভুর প্রশংসা করো! 3 “হে রাজারা, একথা শোনো! হে শাসকেরা, কর্ণপাত করো! আমি, আমিই সদাপ্রভুর উদ্দেশে গান গাইব; গানে গানে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করব। 4 “হে সদাপ্রভু, তুমি যখন সেয়ীর থেকে চলে গেলে, ইদোমের দেশ থেকে কুচকাওয়াজ করলে, পৃথিবী কম্পিত হল, আকাশমণ্ডলও বর্ষণ করল, মেঘমালা জলধারা ঢেলে দিল। 5 পর্বতগুলি সীনয়ের সেই সদাপ্রভুর সামনে কম্পিত হল, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর সামনেই হল। 6 “অনাতের পুত্র শম্‌গরের সময়ে, রাজপথগুলি যায়েলের সময়ে পরিত্যক্ত হল; ভ্রমণকারীরা ঘুরপথে যেত। 7 ইস্রায়েলের গ্রামবাসীরা যুদ্ধ করতে চায়নি; তারা ক্ষান্ত ছিল, যতদিন না আমি, দবোরা উঠে দাঁড়ালাম, যতদিন না আমি, ইস্রায়েলের এক মাতৃস্থানীয়া উঠে দাঁড়ালাম। 8 ঈশ্বর নতুন নেতৃবৃন্দ মনোনীত করলেন যুদ্ধ যখন নগর-প্রবেশদ্বারে ঘনিয়ে এল, কিন্তু একটিও ঢাল অথবা বর্শা দেখা গেল না, ইস্রায়েলে হাজার চল্লিশ সেই সেনানীর হাতে। 9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলী নেতৃবৃন্দের প্রতি আসক্ত হল, জনতার মধ্যে ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি। সদাপ্রভুর প্রশংসা করো! 10 “তোমরা যারা সাদা গাধার পিঠে চেপে যাও, জিন কম্বলের উপর বসে থাকো, আর তোমরা যারা পথযাত্রা করো, বিবেচনা করো 11 জলসেচনের স্থানে সেই গায়কদের রব। তারা সদাপ্রভুর বিজয় বর্ণনা করে, ইস্রায়েলের গ্রামবাসীদের বিজয়। “তখন সদাপ্রভুর প্রজাসকল নগরদ্বারে নেমে গেল। 12 ‘জাগো, জাগো হে দবোরা! জাগো, জাগো, গানে মুখরিত হও! হে বারক, ওঠো! হে অবীনোয়মের পুত্র, বন্দি করো তোমার বন্দিদের।’ 13 “পরিষদবর্গের অবশিষ্টাংশ নেমে এল; সদাপ্রভুর প্রজারা আমার কাছে বিক্রমীদের বিরুদ্ধাচারী হয়ে নেমে এল। 14 কেউ ইফ্রয়িম থেকে এল, যাদের মূল অমালেকেতে ছিল; বিন্যামীন তোমার অনুগামীদের সহবর্তী ছিল। অধিনায়কেরা মাখীর থেকে নেমে এলেন, সেই রণ-দণ্ডধারীরা সবূলূন থেকে এলেন। 15 ইষাখরের নেতারা দবোরার সঙ্গী ছিলেন; হ্যাঁ, ইষাখর বারকেরও সঙ্গী ছিল, তাঁর আদেশে তাঁরা উপত্যকায় সবেগে ছুটে গেলেন। রূবেণের জেলাগুলিতে খুব অন্তর অনুসন্ধান হল। 16 কেন তোমরা মেষ-খোঁয়াড়ের মাঝে বসে রইলে শুধু মেষপালকদের বাঁশির সুর শুনবে বলে? রূবেণের জেলাগুলিতে খুব অন্তর অনুসন্ধান হল। 17 গিলিয়দ জর্ডনের ওপারে থেকে গেল। আর দান, কেনই বা সে জাহাজের পাশে গড়িমসি করল? আশের সমুদ্র উপকূলে থেকে গেল আর তার সেই উপসাগরে বসবাস করল। 18 সবূলূন-প্রজারা নিজ জীবনের ঝুঁকি নিল; নপ্তালিও তাদের দেখাদেখি সোপানক্ষেত্রে তা করল। 19 “রাজারা এলেন, যুদ্ধ করলেন, কনানের রাজারা যুদ্ধ করলেন। তানকে, মগিদ্দোর নদীতীরে, তারা রুপোর কোনো লুন্ঠিত জিনিসপত্র নেয়নি। 20 আকাশমণ্ডল থেকে নক্ষত্রেরা যুদ্ধ করল, তাদের কক্ষপথ থেকে সীষরার বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করল। 21 কীশোন নদী তাদের ভাসিয়ে দিল, যুগবাহিত সেই নদী, সেই কীশোন নদী। হে আমার প্রাণ, এগিয়ে যাও; বলীয়ান হও! 22 তখন অশ্ব-ক্ষুরের বজ্রনিনাদ হল— তাঁর সবল ঘোড়ার জোরে ছোটার শব্দ। 23 সদাপ্রভুর দূত বললেন ‘মেরোসকে অভিশাপ দাও।’ ‘তার প্রজাদের দারুণ অভিশাপ দাও, কারণ তারা সদাপ্রভুকে সাহায্য করতে আসেনি, সদাপ্রভুকে বলশালীদের বিরুদ্ধে সাহায্য করতে।’ 24 “নারীকুলে যায়েল পরমধন্যা, কেনীয় হেবরের স্ত্রী, তাঁবু-নিবাসী নারীকুলে পরমধন্যা। 25 সীষরা জল চেয়েছিলেন, আর তিনি তাঁকে দুধ দিলেন; অভিজাতদের জন্য উপযুক্ত পাত্রে তিনি দধি এনে দিলেন। 26 তিনি তাঁবু-খুটা হাতে তুলে নিলেন, ডান হাতে শ্রমিকদের হাতুড়ি নিলেন। তিনি সীষরাকে আঘাত করলেন, তাঁর মাথা চূর্ণ করলেন, তিনি তাঁর রগ চুরমার ও বিদ্ধ করলেন। 27 তিনি যায়েলের পদাবনত হলেন, পতিত হলেন; যেখানে তিনি পদাবনত হলেন, সেখানেই মরে পতিত হয়ে রইলেন। 28 “খোলা জানালা দিয়ে সীষরার মা তাকিয়েছিলেন; জাফরির পিছন থেকে তিনি চিৎকার করেছিলেন, ‘তার রথ আসতে কেন এত দেরি হচ্ছে? কেন তার রথের ঘর্ঘর-ধ্বনি বিলম্বিত?’ 29 তাঁর জ্ঞানবতী সহচরীরা তাঁকে উত্তর দিল; তিনি নিজেও আপনমনে কথা বললেন, 30 ‘ওরা কি লুন্ঠিত জিনিসপত্র পায়নি? ভাগাভাগি কি করেনি? প্রত্যেক পুরুষের জন্য একটি বা দুটি করে রমণী, সীষরার জন্য লুন্ঠিত রঙিন পোশাক, দোরোখা রঙিন পোশাক, আমার গ্রীবার জন্য উচ্চমানের দোরোখা পোশাক— লুন্ঠিত জিনিসপত্ররূপে এসবই?’ 31 “হে সদাপ্রভু, তোমার সব শত্রু এভাবেই বিনষ্ট হোক! কিন্তু যারা তোমায় ভালোবাসে তারা সব সেই সূর্যের মতো হোক যখন তা সপ্রতাপে উদিত হয়।” পরে চল্লিশ বছর দেশে শান্তি বজায় ছিল।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 5 >