< যিশাইয় ভাববাদীর বই 10 >

1 ধিক্ তাদের, যারা অন্যায় সব বিধান তৈরি করে, যারা অত্যাচার করার জন্য রায় ঘোষণা করে, 2 যেন নিজস্ব অধিকার থেকে দরিদ্রদের বঞ্চিত করে এবং আমার জাতির অত্যাচারিত লোকদের থেকে ন্যায়বিচার হরণ করে, যারা বিধবাদের তাদের শিকার বানায় এবং পিতৃহীনদের সর্বস্ব লুট করে। 3 হিসেব নেওয়ার দিনে তোমরা কী করবে, যখন দূর থেকে তোমাদের উপরে বিপর্যয় নেমে আসবে? সাহায্যের জন্য কার কাছে তোমরা দৌড়ে যাবে? তোমাদের ধনসম্পদ সব কোথায় রাখবে? 4 বন্দিদের মধ্যে ভয়ে কুঁকড়ে থাকা অথবা নিহতদের পতিত হওয়া ছাড়া আর কিছু থাকবে না। তবুও, এ সকলের জন্য তাঁর ক্রোধ প্রশমিত হয়নি, তাঁর হাত এখনও উপরে উঠে আছে। 5 “আসিরিয়াকে ধিক্, সে আমার ক্রোধের লাঠি, যার হাতে আছে আমার রোষের মুগুর! 6 আমি তাকে এক ভক্তিহীন জাতির বিরুদ্ধে পাঠাব, আমি তাকে এক জাতির বিরুদ্ধে প্রেরণ করব, যারা আমাকে ক্রুদ্ধ করেছে, যেন সে লুট করে ও লুণ্ঠনের দ্রব্য কেড়ে নেয়, আর পথের কর্দমের মতো তাদের পদদলিত করে। 7 কিন্তু এরকম তিনি করতে চান না, এরকম কিছু তাঁর মনে আসেনি; তাঁর অভিপ্রায় হল ধ্বংস করা, অনেক জাতির পরিসমাপ্তি ঘটানো। 8 তিনি বলেন, ‘আমার সেনাপতিরা কি সবাই রাজা নয়? 9 আমার হাতে কল্‌নো কি কর্কমীশের মতো, হমাৎ কি অর্পদের মতো এবং শমরিয়া কি দামাস্কাসের মতো মন্দ বরাত হয়নি? 10 আমার হাত যেমন প্রতিমায় পূর্ণ রাজ্যগুলিকে অবরুদ্ধ করেছে, সেইসব রাজ্য, যাদের মূর্তিগুলি জেরুশালেম ও শমরিয়াকেও ছাড়িয়ে গেছে, 11 আমি কি জেরুশালেম ও তার মূর্তিগুলির তেমনই অবস্থা করব না, যেমন আমি করেছি শমরিয়া ও তার প্রতিমাদের?’” 12 প্রভু যখন সিয়োন পর্বত ও জেরুশালেমের বিরুদ্ধে তাঁর সব কর্ম সমাপ্ত করবেন, তিনি বলবেন, “অহংকারে পূর্ণ হৃদয় ও উদ্ধত দৃষ্টির জন্য আমি আসিরীয় রাজাকে শাস্তি দেব। 13 কারণ সে বলে: “‘আমার হাতের শক্তিতে ও আমার প্রজ্ঞার দ্বারা আমি এই কাজ করেছি, কারণ আমার বুদ্ধি আছে। আমি জাতিসমূহের সীমানাগুলি অপসারিত করেছি, আমি তাদের ধনসম্পদ লুট করেছি; এক পরাক্রমী ব্যক্তির মতো তাদের রাজাদের আমি পদানত করেছি। 14 যেমন কেউ পাখির বাসায় হাত দেয়, তেমনই জাতিসমূহের ঐশ্বর্যে আমার হাত পৌঁছেছে; লোকে যেমন পরিত্যক্ত ডিম সংগ্রহ করে, তেমনই আমি সব দেশকে একত্র করেছি; কেউ তার একটিও ডানা ঝাপটায়নি, বা মুখে চিঁ চিঁ শব্দ করেনি।’” 15 কুড়াল কি কাষ্ঠচ্ছেদকের উপরে আস্ফালন করতে পারে? অথবা করাত কি কাঠমিস্ত্রীর বিরুদ্ধে নিজেকে বড়ো মনে করতে পারে? কেউ না চালালে লাঠি কি কাউকে যন্ত্রণা দিতে পারে? কোনো কাঠের মুগুর কি নিজে নিজেই চালিত হয়? 16 সেই কারণে, প্রভু, সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু, তাঁর বলবান যোদ্ধাদের মধ্যে একটি ক্ষয়ে যাওয়া রোগ পাঠিয়ে দেবেন; তার সমারোহের মধ্যে একটি আগুন, একটি প্রজ্বলিত আগুনের শিখা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। 17 ইস্রায়েলের জ্যোতি আগুনের মতো হবেন, তাদের সেই পবিত্রতম জন এক আগুনের শিখা হবেন; একদিনের মধ্যে তার শিয়ালকাঁটা ও কাঁটাঝোপ দগ্ধ হয়ে গ্রাসিত হবে। 18 তার অরণ্যগুলির শোভা ও উর্বরা মাঠগুলি তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে, যেভাবে কোনো অসুস্থ মানুষ ক্ষয় পায়। 19 আর অরণ্যের অবশিষ্ট গাছগুলি সংখ্যায় এত অল্প হবে যে একজন শিশু তাদের গণনা করে লিখে ফেলবে। 20 সেদিন, ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকেরা, যাকোবের কুলে যারা বেঁচে থাকবে তারা, তারা আর তার উপরে নির্ভর করবে না যে তাদের আঘাত করে পতিত করেছিল, কিন্তু তারা প্রকৃতই সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করবে, যিনি ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম জন। 21 এক অবশিষ্ট অংশ ফিরে আসবে; যাকোব কুলের এক অবশিষ্ট অংশ, পরাক্রমী ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে। 22 যদিও তোমার লোকেরা ও ইস্রায়েল সমুদ্রতীরের বালির মতো হয়, তবুও, এক অবশিষ্টাংশই ফিরে আসবে। ধ্বংসের রায় ঘোষিত হয়েছে, তা হবে প্রবল এবং ন্যায়বিচার অনুযায়ী। 23 প্রভু, সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু, সমস্ত দেশের উপরে ঘোষিত ধ্বংসের রায় কার্যকর করবেন। 24 সেই কারণে, প্রভু, সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “সিয়োনে বসবাসকারী, ও আমার প্রজারা, তোমরা আসিরীয়দের থেকে ভীত হোয়ো না, যারা মিশরের মতোই তোমাদের লাঠি দিয়ে প্রহার করেছিল ও তোমাদের বিরুদ্ধে মুগুর তুলেছিল। 25 খুব শীঘ্রই তোমাদের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধের পরিসমাপ্তি হবে, আর আমার রোষ তাদের ধ্বংসের প্রতি চালিত হবে।” 26 সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু তাদের এক চাবুক দিয়ে প্রহার করবেন, যেভাবে তিনি ওরেব-শৈলে মিদিয়নকে যন্ত্রণা দিয়েছিলেন; তিনি তাঁর লাঠি জলরাশির উপরে তুলবেন, যেমন তিনি মিশরে করেছিলেন। 27 সেদিন, তোমাদের কাঁধে দেওয়া তাদের বোঝা ও তোমাদের ঘাড় থেকে তাদের জোয়াল তুলে নেওয়া হবে; সেই জোয়াল ভেঙে ফেলা হবে, কারণ তোমরা ভীষণ হৃষ্টপুষ্ট হয়েছ। 28 তারা অয়াতে প্রবেশ করেছে; তারা মিগ্রোণের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে; তারা মিক্‌মসে তাদের দ্রব্যসামগ্রী সঞ্চয় করেছে। 29 তারা গিরিপথ অতিক্রম করে ও বলে, “আমরা রাত্রির মধ্যে গেবাতে শিবির স্থাপন করব।” রামা ভয়ে কম্পিত হয়; শৌলের গিবিয়া পলায়ন করে। 30 গল্লীমের কন্যারা, তোমরা ক্রন্দন করো! ও লয়িশার লোকেরা, তোমরা শ্রবণ করো! হায়! দুঃখী অনাথোৎ! 31 মদ্‌মেনার লোকেরা পালিয়ে যাচ্ছে; গেবীমের লোকেরা নিজেদের লুকাচ্ছে। 32 আজকের দিনে তারা নোবে গিয়ে স্থগিত হবে; সে সিয়োন-কন্যার পর্বতের দিকে, জেরুশালেমের পাহাড়ের দিকে তার মুষ্টি আন্দোলিত করছে। 33 দেখো, প্রভু, সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু, মহাপরাক্রমে বৃক্ষশাখাগুলি কেটে ফেলবেন। উঁচু সব গাছ পতিত হবে, লম্বা গাছগুলিকে মাটিতে ফেলা হবে। 34 বনের ঘন জঙ্গলকে তিনি কুড়াল দিয়ে কেটে ফেলবেন সেই পরাক্রমী জনের সামনে লেবানন পতিত হবে।

< যিশাইয় ভাববাদীর বই 10 >